অক্তাভিও পাজ
===========
আমার কথা শোন, যেমন করে বৃষ্টির শব্দ শোনে মানুষ।
মনোযোগ না দিয়ে,
অথচ উপেক্ষাভরেও
নয়,
হাল্কা পায়ের শব্দ, ঝিরঝিরে জলের ধারা,
জলের যে ফোঁটা গুলি বাতাসের পরমাণু,
হাল্কা পায়ের শব্দ, ঝিরঝিরে জলের ধারা,
জলের যে ফোঁটা গুলি বাতাসের পরমাণু,
যে বাতাস নিরন্তর সময়,
দিবালোক বিদায় নিচ্ছে,
দিবালোক বিদায় নিচ্ছে,
কিন্তু রাত্রি এখনও বহু দূরে,
দেখ ঐ কোনে কুয়াশার মূর্তি,
আর চেয়ে দেখ এই সময়ান্তরের বাঁকে
দেখ ঐ কোনে কুয়াশার মূর্তি,
আর চেয়ে দেখ এই সময়ান্তরের বাঁকে
দাঁড়িয়ে রয়েছে অনন্তকাল।
আমার কথা শোন, যেমন করে বৃষ্টির শব্দ শোনে মানুষ।
কান না পেতেই শোন আমার কথা
চোখ খুলে রাখ অন্তরমুখী
ঘুমের মধ্যে, কিন্তু তোমার পাঁচটি ইন্দ্রিয় থাকুক সজাগ।
বৃষ্টি পড়ছে, হাল্কা পায়ের শব্দ, অক্ষরের মর্মরধ্বনি
জল,
আকাশ, আর অবয়বহীন বর্ণমালা
আমরা,
এবং দিবারাত্রি, দীর্ঘ সময়কাল অথবা একটি মুহূর্ত
বায়বীয় সময় আর অনন্ত
বিষাদ
আমার কথা শোন,
যেমন
করে বৃষ্টির শব্দ শোনে মানুষ।
ঝকঝক করছে অ্যাস্ফলটের ভিজে রাস্তা,
জলের বাষ্প ভেসে উঠছে, মিলিয়ে যাচ্ছে,
রাত্রি মেলে ধরছে
নিজেকে,
দেখছে আমায়,
তুমি,
তোমার বাষ্পীয় শরীর
তুমি আর তোমার
রাত্রির মুখ
আকাশ ও জলধারা, অবয়বহীন বর্ণমালা
তুমি আর তোমার কেশরাশি, ধীর লয়ে বজ্রপাত,
তুমি রাস্তা পার হয়ে এসে আমার কপালের মধ্যে এসো
জলের পায়ের চিহ্ন আমার চোখে
আমার কথা শোন,
যেমন
করে বৃষ্টির শব্দ শোনে মানুষ।
ঝকঝক করছে অ্যাস্ফলট, তুমি আসছ ওপার থেকে
কুয়াশা ভেসে যায়
রাত্রির আকাশে
আর রাত্রি
নিদ্রামগ্ন তোমার বিছানায়
তোমার প্রশ্বাসে
সমুদ্রের তরঙ্গমালা
তোমার জলের আঙ্গুল ভিজিয়ে দিচ্ছে আমার কপাল
তোমার অগ্নিময় আঙ্গুল পুড়িয়ে দিচ্ছে আমার চোখ
তোমার বাতাসের আঙ্গুল খুলে দিচ্ছে সময়ের আঁখি পল্লব
উৎসারিত স্বপ্ন আর পুনর্জন্ম
আমার কথা শোন,
যেমন
করে বৃষ্টির শব্দ শোনে মানুষ।
সৌরবর্ষ চলে যায়,
ফিরে আসে মুহূর্ত
তুমি কি শুনতে
পাচ্ছ,
কেউ হাঁটছে পাশের ঘরে?
এখানে নয়,
অন্য কোথাও নয়, কেউ হেঁটে গেছে অন্য কোন কালে
যে কাল বর্তমান
সময়
কান পেতে শোন সময়ের
পদধ্বনি
সময়,
যে খুঁজে পেয়েছে অবয়বহীন দিকশুন্যপুর
শোন ছাদের উপর বয়ে
যাচ্ছে বৃষ্টিধারা
রাত্রি আরও গভীর
হল বনাঞ্চলে
গাছের পাতায় লীন হয়ে আছে বজ্রনির্ঘোষ
তুমি যাও
ভেসে যাওয়া অস্থির পথহারা উদ্যানে,
তোমার ছায়া ঢেকে দিক আমার কবিতা
অনুবাদ
কলকাতা / বেঙ্গালুরু
২৯ এপ্রিল,
২০১৮